ঢাকা, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

২৭ চৈত্র ১৪৩১, ১২ শাওয়াল ১৪৪৬

৫ জনের পরিবারটির আর কেউ বেঁচে নেই

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪:৫৩, ৪ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৩৩, ৪ এপ্রিল ২০২৫

৫ জনের পরিবারটির আর কেউ বেঁচে নেই

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার চার দিনের মাথায় মৃত্যুর কাছে হার মানলেন কলেজ শিক্ষার্থী তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন।এ নিয়ে লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ জনে। 

এর আগে এ দুর্ঘটনায় তাসনিয়ার বাবা-মা ও দুই বোন মারা যান। তাসনিয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পরিবারটির কেউ বেঁচে রইল না।

একই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শিশু আরাধ্য বিশ্বাসকে (৮) উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে আজ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চমেক হাসপাতাল থেকে আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাধ্যকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন স্বজনেরা। আরাধ্য চমেক হাসপাতালের শিশু আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল। এখন চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুর্জয় কুমার মণ্ডল (১৮)। তিনি শিশু আরাধ্যের স্বজন।

গত বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাস-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় সেদিনই ১০ জন নিহত হন। তাঁরা হলেন তাসনিয়ার বাবা ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৪৮), মা লুৎফুন নাহার (৩৭), দুই বোন আনিশা আক্তার (১৪), লিয়ানা (৮) ও স্বজন তানিফা ইয়াসমিন (১৬)। এ ছাড়া নিহত হন আরাধ্যর বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা মণ্ডল। নিহত অপর তিনজন হলেন ইউছুফ আলী (৫৭), আশীষ মণ্ডল (৫০) ও মোক্তার আহমেদ (৫২)। ইউছুফ গাড়িচালক ছিলেন বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনজন। তাঁদের মধ্যে আজ তাসনিয়ার মৃত্যু হলো। আহত অপর দুজনের মধ্যে দুর্জয় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর আরাধ্যকে চমেক হাসপাতাল থেকে আজ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলো।

হাসপাতাল সূত্র জানা যায়, দুর্ঘটনার পর থেকেই তাসনিয়া সংজ্ঞাহীন ছিলেন। প্রথম থেকেই তাঁকে চমেকের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছিল।

স্বজনেরা জানান, ঈদের ছুটিতে রফিকুল-লুৎফুন দম্পতি তাঁদের তিন সন্তান, আত্মীয় ও রফিকুলের সহকর্মী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দিলীপ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা পর্যটন শহর কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে গত বুধবার তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, গত বুধবার সকালে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী রিলাক্স পরিবহনের দ্রুতগতির যাত্রীবাহী একটি বাস চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকার মহাসড়কের একটি বাঁকে আসে। তখন চালক ‘হার্ড ব্রেক’ করতে গেলে বাসটির সামনের অংশ ঘুরে মহাসড়কে আড়াআড়ি হয়ে যায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা কক্সবাজারগামী দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়। মুহূর্তেই কক্সবাজারগামী দ্রুতগতির আরেকটি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। হতাহতরা সবাই প্রথম মাইক্রোবাসটির যাত্রী।

আরও পড়ুন