শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৬, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১২:২০, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবারও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিয়ে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। দেওয়া হয় আগুন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহসহ অন্তত ৩৫ জেলায় ভেঙে দেওয়া হয় শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও নামফলক।
গত বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল ছাত্র-জনতা। বুলডোজারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ওই ভবন। ওই বাড়ির বিভিন্ন আসবাব, লোহা, ভাঙা গ্রিল, কাঠ– যে যেভাবে পেরেছে, লুট করে নিয়ে গেছে।
বুধবার রাতে আগুন দেওয়া হয় ধানমন্ডি-৫-এর শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনেও।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন লাগার খবর পেয়েও নিরাপত্তাহীনতার কারণে নির্বাপণ করতে যেতে পারেননি তারা। এদিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে হামলা-ভাঙচুরের পর একই ধরনের ঘটনা বাধাহীনভাবে বুধবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘটতে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল নিষ্ক্রিয়।
নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ভোলায় দলটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ঝালকাঠি ও বরিশালে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, নওগাঁয় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, রাজশাহীতে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বরিশালে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় জামালপুর সদরের নরুন্দি রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওনের গ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। রাতে কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাসা ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
এদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলার ঘটনায় গতকাল বিবৃতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ঘটনাকে অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পলাতক অবস্থায় ভারতে বসে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে জনমনে গভীর ক্রোধের সৃষ্টি হয়েছে, যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ ছাড়া দিল্লিতে বসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ক্রমাগত মিথ্যা-বানোয়াট মন্তব্য ও বিবৃতি দেওয়ায় ভারতের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে তাঁর হাতে একটি প্রতিবাদপত্র তুলে দেয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
গতকাল এক অনুষ্ঠানে ৩২ নম্বরে হামলা-ভাঙচুরের ব্যাপারে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত আমি নিজে সেখানে ছিলাম।’
সেখানে সাংবাদিকদের ওপরও হামলা হয়েছে– এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার কোনো তথ্য আমি পাইনি।’