শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:৫৭, ১০ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৫৭, ১০ মার্চ ২০২৫
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হলেন। স্থানীয় সময় রোববার প্রধামন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা। মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
রোববার সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট। টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। এরপর তাঁর উত্তরাধিকার বাছাইয়ের জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল।
কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হাউস অব কমন্সের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে যিনি লিবারেল পার্টির প্রধান হবেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি। এ হিসেবে মার্ক কার্নি নির্বাচনের আগপর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক টালমাটাল সময়ে কানাডা যখন নানা সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন কার্নি দেশটির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে থাকা দীর্ঘ দিনের মিত্র, প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে আছে কানাডা। তারপর কার্নিকে দ্রুতই একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
ট্রাম্পের বিষয়ে কার্নি বলেন, “একজন আছেন যিনি আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন। তিনি কানাডার শ্রমিক, পরিবারগুলো ও ব্যবসার ওপর আক্রমণ চালাচ্ছেন। আমরা তাকে সফল হতে দিতে পারি না। আমাদের এমন কিছু করতে হবে যা আমরা আগে কল্পনাও করিনি, এমন দ্রুত করতে হবে যা সম্ভব বলে আমরা মনে করি না।’
ট্রুডো নয় বছরেরও বেশি সময় ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। কিন্তু জনসমর্থন হ্রাস পাওয়ায় জানুয়ারিতে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ফলে লিবারেল পার্টিকে দ্রুত নতুন নেতা নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। ট্রুডো বলেন, ‘কোনো ভুল করবেন না, এটি একটি জাতি-নির্ধারক মুহূর্ত। গণতন্ত্র প্রদত্ত কিছু নয়। স্বাধীনতাও প্রদত্ত কিছু না। এমনকি কানাডাও প্রদত্ত কিছু না।’
কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর থাকার পর ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডের প্রথম অ-ব্রিটিশ গভর্নর হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই অভিজ্ঞতা থাকার কারণে যে কোনও অর্থনৈতিক সঙ্কট তিনি সহজে মোকাবেলা করা এবং ট্রাম্পকেও তিনি ভালভাবে সামাল দিতে পারবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে রাজনীতিতে তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। এ জগতে নতুন তিনি। যাকে তার দুর্বলতার দিক বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।
কিন্তু লিবারেল পার্টিকে তিনি সবচেয়ে সঠিকভাবে উজ্জীবিত করতে পারবেন বলে ধারণা কার্নির। পাশাপাশি ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায়ও তিনি সবচেয়ে দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবেন বলে দাবি করেছেন।
ট্রাম্প কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এই হুমকি বাস্তবায়িত হলে কানাডার রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে পড়বে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ট্রুডো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা ৩০ হাজার কোটি কানাডিয়ান ডলারের পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন।
কার্নি বলেছেন, ‘আমেরিকান আমাদের শ্রদ্ধা না দেখানো পর্যন্ত আমার সরকার আমাদের আরোপ করা শুল্ক বজায় রাখবে।’
রাজনীতিতে বহিরাগত কার্নিই হচ্ছেন কানাডার এ জগতের অভিজ্ঞতাহীন প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি জানিয়েছেন, দুটি জি৭ রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্বপালনের অভিজ্ঞতা থাকা প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনিই ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত প্রার্থী।