শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:১৯, ২১ এপ্রিল ২০২৫
প্রতীকী ছবি
রোববার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রকল্পগুলোর সম্মিলিত আকার প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি। ভারত সরকার এখন তাদের আঞ্চলিক রেল কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে। এর অংশ হিসেবে উত্তর ভারতের রেল অবকাঠামো জোরদার করার পাশাপাশি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে বিকল্প রুট ব্যবহার করে সংযোগ স্থাপনের সম্ভাবনা বিবেচনা করছে দিল্লি।
দ্য হিন্দু জানায়, ভুটান ও নেপালের বিকল্প রুটে রেল সংযোগ স্থাপনে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার কোটি রুপি।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের রেল অবকাঠামো ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন। এতে সংকীর্ণ শিলিগুড়ি করিডরের ওপর নির্ভরতা কমানো যেত। এই করিডরই মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা দ্য হিন্দুকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা বাংলাদেশে নির্মাণ সামগ্রী বা অন্যান্য উপকরণ পাঠাচ্ছি না। এই রুটে সংযোগ স্থাপনের জন্য নির্ধারিত প্রকল্পের অর্থও স্থগিত রাখা হয়েছে। আগে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসা দরকার। তবে ভারতের অংশে কাজ চলমান রয়েছে।’
দিল্লির অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন তিনটি প্রকল্প ইতোমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে—
প্রায় ৪০০ কোটি রুপি ব্যয়ে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার অংশ বাংলাদেশে এবং ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটার ত্রিপুরা রাজ্যে। কুলাউড়া-শাহবাজপুর অংশটি প্রকল্পের একটি ধাপ, যার প্রধান লক্ষ্য আসামের সঙ্গে রেল সংযোগ উন্নত করা।
৩২৮ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি রুপি) এই প্রকল্পটি একটি ঋণ চুক্তির আওতায় বাস্তবায়নাধীন। এতে ৬৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে মোংলা বন্দর খুলনার রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে। মোংলা বন্দরের একটি টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব ভারতের হাতে রয়েছে।
২০২৭ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটির অগ্রগতি গত বছর পর্যন্ত ছিল ৫০ শতাংশের নিচে। এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে এই প্রকল্পের প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি ভারতীয় ঋণ সহায়তা আসার কথা ছিল। তবে, তহবিল ছাড়ের ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা ছিল বলে সূত্র জানায়।
আরেক কর্মকর্তার বরাতে দ্য হিন্দু জানায়, আরও পাঁচটি স্থানে রেল সংযোগের জন্য লোকেশন জরিপ চলছিল, সেগুলোর কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারত এখন অভ্যন্তরীণ এবং বিকল্প আঞ্চলিক কৌশলের দিকে ঝুঁকছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার অঞ্চলে রেললাইন দ্বিগুণ বা চারগুণ করার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যেখান দিয়ে শিলিগুড়ি করিডরে প্রবেশ করা যায়। এতে সক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়বে।
পাশাপাশি, নয়াদিল্লি ভুটান ও নেপালের মাধ্যমে নতুন রেল সংযোগ স্থাপনের সম্ভাবনাও পর্যালোচনা করছে। ভারত-নেপাল রেল চুক্তির আওতায় ইতোমধ্যে কিছু সম্ভাব্য রুট রয়েছে, তবে এসব রুট বাস্তবায়নে লজিস্টিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য হিন্দু