শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৪০, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১১:৩৮, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করলে তিনি সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হতে পারেন না। কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে এসব তোয়াক্কা করেননি এমপি-মন্ত্রীরা। আইনের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নিজেদের মতো নিয়েছেন সকল ধরণের সুবিধা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য ছিলেন, এমন ২৪ জনের দ্বৈত নাগরিকত্ব (কারও কারও ক্ষেত্রে রেসিডেন্স কার্ড বা গ্রিন কার্ড) থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরকারে থেকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সেসব দেশে অর্থের পাহাড় গড়েছেন। সরকার পতনের পর অনেকেরই আরাম আয়েশে দিন কাটছে সেসব দেশে।
ইউরোপ
শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গোপনে সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন। সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব রয়েছে সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ‘রেসিডেন্স কার্ড’ (স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি) রয়েছে বেলজিয়ামের। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যুক্তরাজ্যের নাগরিক। এছাড়া মো. তাজুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও মো. মাহবুব আলী এই দেশের নাগরিক। তাঁদের মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাহবুব আলীকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য (টাঙ্গাইল-২ আসন) তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির জার্মানির নাগরিক।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বা গ্রিন কার্ড রয়েছে সাবেক চারজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ সাতজন সংসদ সদস্যের। দুদকের অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত যাঁদের নাম এসেছে, তাঁরা হলেন আব্দুস শহীদ, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহ্মেদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ), মাহফুজুর রহমান ও সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ। তাঁদের মধ্যে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তারের পর এখন কারাগারে।
কানাডা
কানাডার নাগরিকত্ব রয়েছে, এমন ছয়জনের নাম পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে একজন সাবেক মন্ত্রী, অন্যরা সাবেক সংসদ সদস্য। এর মধ্যে রয়েছেন আবদুর রহমান, মাহবুব উল আলম হানিফ, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (নাসিম), শামীম ওসমান, শফিকুল ইসলাম (শিমুল) ও হাবিব হাসান।
অস্ট্রেলিয়া
সাবেক সংসদ সদস্য (ময়মনসিংহ-১১) এম এ ওয়াহেদ পাপুয়া নিউগিনির নাগরিকত্ব নিয়েছেন।
এশিয়া
জাপানে থাকার অনুমতি (রেসিডেন্স কার্ড) রয়েছে সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে একাধিক মন্ত্রী-এমপিদের নাম সংবাদমাধ্যমে এসেছে, যারা বিদেশে বিপুল সম্পত্তি পাচার করেছেন। এর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক বেলজিয়াম ও যুক্তরাষ্ট্রে ভাইয়ের কাছে সম্পত্তি গড়েছেন, যেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের পরিকল্পনা রয়েছে। শতাধিক মন্ত্রী, এমপি ও নেতা দেশ ছেড়েছেন। তারা রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন ও দুবাই পাড়ি জমান।
দুদকের অনুসন্ধানে যে ২৪ জনের নাম এসেছে, তাঁদের মধ্যে পাঁচজন এখন কারাগারে। বাকিরা গত ৫ আগস্টের পর আর প্রকাশ্যে আসেননি।