রুয়েট শিক্ষার্থীদের হামলা, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

তুচ্ছ ঘটনা ও কথা-কাটাকাটির জেরে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন রুয়েট শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী পদ্মা আবাসিক-সংলগ্ন হজোর মোড়ে দোকানির সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে এ হামলা চালায় বহিরাগতরা। 

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখানে আধা ঘণ্টা অবস্থান করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তালাইমারী মোড় হয়ে ভদ্রা মোড়ে অবস্থান নেন তারা। পরবর্তীতে বেলা দেড়টার দিকে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। 

সড়ক অবরোধ অবস্থায় যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মারুফ বিল্লাহ রিফাত গতকালের ঘটনা বর্ণনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং হামলায় দোষীদের বিচারের পাশাপাশি রুয়েট ক্যাম্পাস ও এর আশপাশে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবি জানান। তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি পেশ করেন। দাবীগুলো হলো হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার; রাজশাহীর আবাসিক এলাকাগুলোকে অস্ত্র, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করা; রুয়েট ও এর আশপাশের এলাকাগুলোকে চুরি, ছিনতাইকারীমুক্ত করা; চুরি করা মালামাল ফেরত ও জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা এবং রুয়েটের ভেতরে বহিরাগত প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।  

সোমবার(১৬ ডিসেম্বর)রাতে দুই দফা হামলার শিকার হন রুয়েট শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। গতকাল রাত থেকে আহত তিন শিক্ষার্থী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় রাতেই রুয়েটের উপপরিচালক (সিকিউরিটি) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন। রাতেই দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় রাতেই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের আজ মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রুয়েট শিক্ষার্থী রকি ও শুভ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য পদ্মা আবাসিকের হজোর মোড়ে যান। কেনাকাটা শেষে ৫০০ টাকার নোট দিলে দোকানদার শাহাবুদ্দিন জানান, খুচরা নেই। তখন শিক্ষার্থীরা আরও জিনিস কিনে টাকাটা ভাংতি করতে বলেন। দোকানদার এতে বাজে আচরণ করেন তাঁদের সঙ্গে। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে দোকানদার তাঁদের গায়ে হাত তোলেন। সেখানে শিক্ষার্থী শুভর মাথায় স্থানীয় একজন বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন। রকিকেও মারধর করা হয়। পরে তাঁরা তাঁদের ব্যাচের অন্যদের ফোনে খবর দেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকেরাও উপস্থিত হন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেখানে বাজারের বণিক সমিতির সঙ্গে কথা বলছিলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় দ্বিতীয় দফায় হামলা করা হয় শিক্ষার্থীদের ওপর। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রসঙ্গত, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের পদ্মা আবাসিক এলাকায় স্থানীয় দোকানদারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে রুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটে।