শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:৫৮, ১১ মার্চ ২০২৫
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ শিল্পীরাও। ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পীরা। সোমবার বিকেলে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উদ্যোগে এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন অভিনেত্রী রোজিনা, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরসহ অনেকে। এ সময় তরুণ অভিনেতা ইমরান হাসো খোলা বুকে বিচারের স্লোগান ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’ আর পিঠে ‘আছিয়া আমার বোন’ লিখে নিয়ে আসেন। যা মানুষের প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
২০১৫ সালে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে হা-শো রিয়েলিটি শো দিয়েই মিডিয়ায় পা রাখেন ইমরান। তারপর নাম লেখান নাটক-সিনেমায়। প্রায় ৫ শতাধিক নাটক ও সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি নানা জনহিতকর কাজেও এগিয়ে আসেন এই অভিনেতা। ইমরান অন্যায়- অবিচারের প্রতি যেমন নানা সময়ে স্বোচ্ছার ভূমিকা রেখেছেন, তেমনি জনকল্যানে এগিয়ে এসেছেন। গতকাল স্বনামধন্য তারকাদের সঙ্গে সামনে থেকে গলা মিলিয়েছেন। ইমরান বলেন,‘বিচার না হওয়ার জন্যই ধর্ষণ হচ্ছে। প্রমান থাকার পরও কেনো বিচারে ৯০/১৮০ দিন লাগবে! নব্বই দিন দেখতে গেলে ওই আছিয়া আবার ধর্ষিত হবে। আমরা ধর্ষকের ওপেন ফাঁসি চাই। ফরিদপুরে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ধর্ষককে পিটিয়ে মেরেছে। ধর্ষককে আইন দ্রুত বিচার করবে। ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে যেন কেউ না লড়তে পারে সেটাও আমাদের দেখতে হবে। আমাদের এই সোনার বাংলায় আর কোনো আছিয়া যেন ধর্ষিত না হয়।’
চিত্রনায়িকা রোজিনা বলেন, ‘এই কাজটি যারা করেছে, তারা মানুষ নয়। তারা মানুষ নামের ভয়ংকর পশু। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, তাদের জনসমক্ষে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা দেখতে পাই, দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা-কেউই ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই পায় না। ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করার পর তাদের কী বিচার হয়? তাদের কী ধরনের বিচার হয় আমরা জানতে পারি না, তাদের ফাঁসি হয় কি না, তা–ও জানতে পারি না।’
মানববন্ধনে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমরা সবাই অবগত, কী হয়েছে? কী ঘটেছে? আমরা সবাই এ ব্যাপারে সোচ্চার যে আমরা কী করতে চাই, কী বলতে চাই। আমরা চাই শিশু ধর্ষণসহ সব ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হোক। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক; যাতে অন্যরা এ ধরনের অপরাধ করার আগে একবার না, দশবার ভাবে। একই সঙ্গে, প্রমাণ সংগ্রহ ও তদন্তপ্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে অপরাধীরা কোনোভাবেই রেহাই না পায়। শুধু কঠোর শাস্তিই যথেষ্ট নয়, সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করাও অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।’
বিএফডিসিতে অনুষ্ঠিত ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএ তায়েব, শিপন মিত্র, জয় চৌধুরী, রুমানা ইসলাম মুক্তি, কমল সরকার প্রমুখ।