ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

আয়েশা তাকিয়া কেন মুসলিম হয়েছিলেন

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:৫০, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১২:৫৮, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আয়েশা তাকিয়া কেন মুসলিম হয়েছিলেন

শহীদ কাপুরের পাশে দাঁড়িয়ে ‘আই অ্যাম অ্যা কমপ্ল্যান গার্ল’ বলা ৪ বছরের সেই মেয়েটির কথা মনে আছে? অথবা ‘টারজান’ ছবির সেই মিষ্টি মেয়েটির কথা? বলিউড অভিনেত্রী আয়েশা টাকিয়ার কথা বলা হচ্ছে। সালমান খানের বিপরীতে ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওয়ান্টেড’ সিনেমার মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এসেছিলেন। এরপর পাঠশালা (২০১০) এবং আপকে লিয়ে হাম (২০১৩) এর মতো প্রশংসিত সিনেমায় অভিনয় করেন। কিন্তু তারপরই বলিউডকে বিদায় জানিয়ে ঘর-সংসারে ব্যস্ত হয়ে উঠেন। 

মাত্র চার বছর বয়সে বিনোদন জগতে পা রাখা আয়েশা টাকিয়া বলিউড থেকে কিভাবে ছিটকে গেলেন? মূলত ২০০৯ সালে সমাজবাদী পার্টির নেতা আবু আজমির ছেলে ফারহান আজমিকে বিয়ে করার পরই ক্যারিয়ারের মোড় পরিবর্তন করেন আয়েশা। হিন্দু থেকে স্বামীর ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছেন। আয়েশার জন্ম ১৯৮৬ সালের ১০ এপ্রিল। তার বাবা নিশীথ গুজরাতের বাসিন্দা ছিলেন। মা, ফার্দিয়া ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। একটা সময় আয়েশার শ্বশুর সাংসদ আবু আজমি তোপের মুখে পড়েছিলেন। হিন্দুত্ববাদি সংঘঠনগুলোর দাবি ছিল, জোর করে আয়েশাকে হিন্দু থেকে মুসলিম বানানো হয়েছে। তবে ধর্ম পরিবর্তন নিয়ে আয়েশা কখনো মুখ খোলেননি। 

বিয়ের পরে আয়েশার মাত্র দু’টি ছবি মুক্তি পায়। ২০১১ সালের পর থেকে তাকে আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি। মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিয়ে করার কোনও অনুতাপ নেই নায়িকার। এ কথা নিজেই জানিয়েছেন আয়েশা। তাঁর সারাদিনের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে ১২ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে মিখাইল আজমী।

ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর, সিনেমায় অভিনয় থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরে কিছু টেলিভিশন রিয়েলিটি শো-তেও অংশ নিয়েছিলেন আয়েশা। কিন্তু সেও নামমাত্র। বিয়ের পরে সেভাবে ক্যারিয়ারকে প্রাধান্যই দেননি অতীতের কমপ্ল্যান-গার্ল।

চেম্বুরের সেন্ট অ্যান্থনিজ গার্লস হাই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী আয়েশা মাত্র ১৫ বছর বয়সে ফাল্গুনি পাঠকের মিউজিক ভিডিও ‘মেরি চুনর উড় উড় যায়’ এ অভিনয় করেন। এরপর আরও বেশ কিছু মিউজিক ভিডিওতেও অভিনয় করে তিনি। 

২০০৪ সালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান। তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন ‘শোচা না থা’ ছবিতে। কিন্তু সেই ছবির কাজ শেষ হতে দেরি হয়। ছবি মুক্তি পায় ২০০৫ সালে। তার আগেই মুক্তি পেয়ে যায় আয়েশার আর একটি ছবি ‘টারজান: দ্য ওয়ান্ডার কার’। ফলে সেটিই তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি। এই ছবিতে নবাগতা আয়েশা অভিনয়ের জন্য পুরস্কৃত হন।

এরপর আয়েশার পরপর কয়েকটি ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। তারপর তিনি অভিনয় করেন নাগেশ কুকুনুড়ের পরিচালনায় ‘ডোর’ সিনেমায়। এই ছবিতে এক রাজস্থানি গ্রাম বধূর ভূমিকায় আয়েশার অভিনয় পুরস্কত হয়।

‘ডোর’ এর পরে অনুরাগীরা আশা করেছিলেন আয়েশাকে অন্যরকমের ভূমিকায় আরো বেশি দেখা যাবে। কিন্তু তাকে দেখা যায় তথাকথিত বলিউডি নায়িকার ভূমিকাতে। আয়েশা টাকিয়ার উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো ওয়ানটেড, পাঠশালা, দিল মাঙ্গে মোর, শাদি নাম্বার ওয়ান, সালাম-ই-ইশক, ফুল অ্যান্ড ফাইনাল, সানডে, দে তালি ইত্যাদি।

কাজ থেকে দূরে থাকলেও নিয়মিত শরীরচর্চা করেন আয়েশা। কয়েক বছর আগে শোনা গিয়েছিল, তিনি ঠোঁটে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে দেন আয়েশা। কীভাবে সময় কাটে আয়েশার? নিজের ১২ বছরের শিশুপুত্রের সঙ্গে সময় কাটাতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে আয়েশার। এছাড়া পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে যেতে ভালবাসেন আয়েশা।

শপিং ডেস্টিনেশের জন্য তার প্রিয় ছুটি কাটানোর জায়গা হল ইতালি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, লন্ডন এবং মালয়েশিয়া। অভিনেত্রী না হলে তিনি নাকি ট্র্যাভেল শো-এর সঞ্চালক হতেন। রান্না করতে ভালবাসেন না। পশুপ্রেমী আয়েশা পেটার সদস্য। বহু দিন ধরেই তিনি ভেগান। তবে রান্না করতে ভালবাসেন না চা-ভক্ত আয়েশা। 

আরও পড়ুন