ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

৬ বৈশাখ ১৪৩২, ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

পরীর জন্য বোটক্লাবে ঢুকতে দেয়নি বেনজীর, অভিযোগ নাসিরের

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রকাশ: ১৫:২৩, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৫:২৪, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

পরীর জন্য বোটক্লাবে ঢুকতে দেয়নি বেনজীর, অভিযোগ নাসিরের

‘পরীমনি-কাণ্ডের পরে আমি তিন বছর বোট ক্লাবে আসতে পারিনি।’ এমন অভিযোগ জানিয়েছেন বর্তমান ঢাকা বোট ক্লাব প্রেসিডেন্ট নাসির মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি যেভাবে হেনস্তা হয়েছি, সেভাবে হেনস্তা হওয়ার কথা ছিল না। পরীমনি এই ক্লাবের সদস্য নন। তিনি কারো গেস্ট হয়ে ক্লাবে এসেছিলেন। ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী, যদি কোনো সদস্যকে গেস্ট আনতে হয়, সে জন্য অনুমতি লাগে। তার (পরীমনির) কোনো অনুমতি ছিল না। আমি প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো। তার (পরীমনির) উচ্ছৃঙ্খলতা আমি মানতে পারিনি।’ 

বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বোট ক্লাবের রিভারভিউ লাউঞ্জে ‘বিগত ক্লাব সভাপতি বেনজীর আহমেদের আর্থিক অনিয়ম’ শিরোনামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান বর্তমান নাসির মাহমুদ।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকে উনি (বেনজীর) তিন বছর ক্লাবে আসতে দেননি। আমি বোট ক্লাবে এলে আয়নাঘরে নিয়ে যাওয়া হতো। তার বাহিনী দিয়ে তিনি অনেক কিছুই করতে পারতেন। আমি ভয়ে আসিনি। তার অনেক ক্ষমতা ছিল, আমি শুধু একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে ফাইট দেওয়ার মতো অবস্থান আমার ছিল না। তবে আমি হাল ছাড়িনি, আইনি লড়াই করে গেছি। আমি তিনবার তার (বেনজীর) নামে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি।’ 

সংবাদ সম্মেলনে বোট ক্লাব সভাপতি বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ জাস্টিস, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব, সাবেক সচিব, সামরিক বাহিনীর বড় বড় কর্মকর্তা, পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এই ক্লাবের সদস্য। বোট ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যরা যাকে সভাপতি বানান, তিনি আসলেই সামাজিকভাবে অত্যন্ত স্বীকৃত ব্যক্তি। উনি (বেনজীর) বিনা ভোটে বোট ক্লাবের মতো বড় ক্লাবের সভাপতি হয়ে সামাজিক সম্মান গেইন করতে পারেন। এটা তো হতেই পারে। তিনি (বেনজীর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছিলেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেই ডিগ্রি বাতিল করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বোট ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিভিন্ন প্রকার চাপে প্রেসিডেন্ট পদটি একজনের (বেনজীর) জন্য আমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। পরে অন্যান্য ক্লাবের মতো নির্বাচন দেওয়াসহ নানা নিয়মের বিষয়ে কোনো ধার ধারেননি সাবেক প্রেসিডেন্ট বেনজীর আহমেদ। উনি শুধু সময়ক্ষেপণ করেছেন। একই সঙ্গে আমাদের ক্লাব যেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত, তাই নানা নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, সে জন্য প্রতিবছর কিছু ডকুমেন্ট সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সাবমিট করতে হয়, সেখান থেকেও ডকুমেন্ট আসে, উনি এসবের কিছুই করেননি।’ 

তিনি যোগ করেন, ‘বোট ক্লাবের অস্তিত্ব দিন দিন বিপন্ন হয়ে যাচ্ছিল। পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত হয়ে আমরা এলাম, সব ডকুমেন্ট আমরা নিয়েছি। তবে বাস্তবতা হলো উনি পালিয়ে যাওয়ার পর নির্বাচন হয়েছে তা নয়, উনি থাকতেই কিন্তু নির্বাচনের তারিখ দিতে বাধ্য হয়েছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে উনাকে একাধিকবার নোটিশ দিই সংবিধান মতে প্রতিবছর নির্বাচন দেওয়ার জন্য। গত ২৪ জুন উনাকে উল্লেখ করে নোটিশ দিই যে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি চরম ক্ষমতায় থাকার মধ্যে নির্বাচনের তারিখ দিতে বাধ্য হয়েছেন।’

বোট ক্লাব প্রেসিডেন্ট জানান, সাবেক ক্লাব প্রেসিডেন্ট বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক ক্লাব সেক্রেটারি লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনের আর্থিক অনিয়মজনিত বিষয়ে সংশ্লিষ্টতার কারণে গতকাল ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডের প্রথম নির্বাচিত কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিগত ক্লাব প্রেসিডেন্ট বেনজীর আহমেদ এবং লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনের সদস্য পদ বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নকিব সরকার অপু, মো. জেসমুল হুদা মেহেদী অপু, আসমা আজিজ, এ কে এম আইয়াজ আলী (খোকন), আলীম আল কাজী (তুহিন), খালেদা আক্তার জাহান, মির্জা অনিক ইসলাম, আজাদ এম এ রহমান, মো. জাকির হোসাইন, খন্দকার হাসান কবিরসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

/এমআরএইচ

আরও পড়ুন