শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেক্স
প্রকাশ: ১৫:৩৮, ১২ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১৬:১৩, ১২ মার্চ ২০২৫
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে জঙ্গিদের হাতে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময় অভিযানে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন।
গতকাল মঙ্গলবার (১২মার্চ) কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বালুচিস্তানের বোলান এলাকায় পৌঁছানোর পর হামলার শিকার হয়। এসময় জঙ্গিদের ছোড়া গুলিতে ট্রেনের চালক ও কয়েকজন যাত্রী আহত হন। পরে ট্রেনে উঠে সেটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র হামলাকারীরা। সে সময় ট্রেনের চার শতাধিক যাত্রীকে জিম্মি করে তারা।
এসময় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রেললাইনের একটি অংশও উড়িয়ে দেওয়া হয়। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বালুচ লিবারেশন আর্মি।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচিস্তানের বোলান জেলায় হামলার শিকার জাফর এক্সপ্রেসে থাকা ১৫৫ জন জিম্মিকে সফলভাবে মুক্ত করা হয়েছে এবং ২৭ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সর্বশেষ জঙ্গিকে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।
ট্রেনটিতে ঠিক কতসংখ্যক সশস্ত্র জঙ্গি অবস্থান করছে তার সংখ্যা এখনও নির্দিষ্ট নয়। নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, অবশিষ্ট জিম্মিদের উদ্ধারের জন্য নিরাপত্তা সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
জানা গেছে,হামলার সময় ট্রেনে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর শতাধিক সদস্যসহ কমপক্ষে চারশ' যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদের বেশিরভাগই হামলাকারীদের হাতে জিম্মি হন। যাত্রীদের জিম্মি করে বালুচিস্তানের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাবি করেছে বালুচ লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে না নিলে জিম্মিদের হত্যা করারও হুমকি দিয়েছে তারা।
এদিকে পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় বালুচ লিবারেশন আর্মির সদস্যরা এখন নারী ও শিশুদের ‘ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে খুব সাবধানতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে বেলুচিস্তানের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি না দিয়ে জিম্মি উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখলে সরকারকে 'ভয়াবহ পরিণতি' ভোগ করতে হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
এর আগে বালোচ লিবারেশন আর্মিকে (বিএলএ) নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান সরকার। তারপরও এই সশস্ত্র সংগঠনটি বালুচিস্তানকে স্বাধীন করার দাবিতে কয়েক দশক ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ স্টেশন, রেললাইন, মহাসড়কসহ সরকারি অসংখ্য স্থাপনায় তাদেরকে প্রায়ই হামলা চালাতে দেখা যায়।
প্রসঙ্গত, বালুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ। প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকেও প্রদেশটি সবচেয়ে সমৃদ্ধ। কিন্তু এখনও সেখানে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি।