শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:০৩, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১২:১৮, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
এআইএলএ-এর ‘দ্য স্কোপ অব ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশনস অ্যাগেইনস্ট ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস’ শীর্ষক প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বাতিল হওয়া ভিসাধারীদের মধ্যে ৫০ শতাংশ ভারতের এবং ১৪ শতাংশ চীনের। এছাড়াও, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল এবং বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও এই তালিকায় রয়েছেন।
গত চার মাস ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিদেশি শিক্ষার্থীদের ডেটা, তাদের কার্যকলাপ ও সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজরদারি করছে। অনেকের অভিযোগ, এই নজরদারি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে করা হচ্ছে। এর ফলে, কোনো ধরনের অপরাধের ইতিহাস বা ক্যাম্পাস বিক্ষোভের সাথে জড়িত না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের ভুলভাবে চিহ্নিত করার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এর আগে গত মার্চ মাসে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ নামে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভিসাধারীদের চিহ্নিত ও নজরদারি করা হবে। এ ঘটনায় রুবিও জানান, এই শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপও পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ অথবা ফিলিস্তিন ও হামাসের প্রতি সমর্থনের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (এসইভিআইএস) পোর্টালের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ভিজিটরদের ট্র্যাক করে।
এ বিষয়ে আইসিই-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এসইভিআইএস সিস্টেমে ৪ হাজার ৭৩৬ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা স্ট্যাটাস বাতিল করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই এফ১ ভিসাধারী।
এদিকে ভিসা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, মাত্র ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের নোটিশ পেয়েছেন, তাও ই-মেইলের মাধ্যমে। এদের মধ্যে কেবল ২ জন শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক বিক্ষোভের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া, নোটিশ দেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। অনেক শিক্ষার্থী সরকারের কাছ থেকে কোনো নোটিশ পাননি, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানানো হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই কোনো প্রকার তথ্যপ্রমাণ বা ব্যাখ্যা ছাড়াই, এমনকি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই ভিসা বাতিল করেছে প্রশাসন।
এআইএলএ এই প্রশাসনিক পদক্ষেপকে নজিরবিহীন আখ্যা দিয়েছে এবং বলেছে, সরকারের এই পদক্ষেপ বেশ কিছু আইনি প্রশ্ন তৈরি করেছে, যার জন্য সম্ভবত আইনি লড়াইয়ের প্রয়োজন হতে পারে।
তবে এই ভিসা বাতিলের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ ৩২৭টি ঘটনার মধ্যে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) ভিসাধারী। ওপিটি আন্তর্জাতিক এফ১ ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে ১২ মাস পর্যন্ত কাজের সুযোগ দেয়। এই শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত। ভিসা বাতিল হওয়ার ফলে তারা এখন আর কাজ করতে পারবেন না। ভিসা বাতিলের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক, মিশিগান এবং অ্যারিজোনার মতো রাজ্যগুলো।
ঢাকা এক্সপ্রেস/বিডি