শিরোনাম
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৩২, ৭ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ০০:৪৪, ৮ মার্চ ২০২৫
সাহ্রিতে যা খেলে ক্ষুধা কম লাগে
পবিত্র রমজান মাসে সাহ্রি থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত দীর্ঘ সময় রোজাদারদের না খেয়ে থাকতে হয়। তাই সাহ্রি হতে হবে পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যকর, যেন সারা দিন শরীরে শক্তি অটুট থাকে। অনেকেই আবার সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে বলে সাহ্রিতে যত বেশি সম্ভব খেয়ে নেন, যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বরং সাহ্রির খাবার এমন হওয়া দরকার, যেন তা সারা দিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে আবার শরীরও ঠিক থাকে। তাই জেনে রাখুন দৈনিক চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে কীভাবে সাহ্রির খাবার বেছে নেবেন।
রমজান মাসে দিনভর যে শক্তি ও পুষ্টির চাহিদা থাকে, তা পূরণে সাহ্রিতে এমন খাবার খেতে হবে, যা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও মিনারেল–সমৃদ্ধ হয়।
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার
সেহরিতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীর তা থেকে ধীরে ধীরে শক্তি শোষণ করে ও তাড়াতাড়ি ক্ষুধা অনুভব হয় না। ডিম, মাংস, মাছ, বা দই প্রোটিনের ভালো উৎস।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার
ফাইবার দ্রুত হজম হয় না, যা দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই সেহরিতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন-ওটস, ব্রাউন রাইস বা রুটি খাওয়া উচিত। ফাইবারের কারণে খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থাকে, ফলে ক্ষুধা কমে যায় ও শরীরের শক্তি বজায় রাখে।
পূর্ণ শস্যজাত খাবার
পূর্ণ শস্যজাত খাবার (যেমন-ব্রাউন রাইস, কোয়িনোয়া ইত্যাদি) ধীরে ধীরে শক্তি ছাড়ায়, এবং এটি দীর্ঘ সময় ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। এই ধরনের খাবারে উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকে, যা হজম প্রক্রিয়াকে ধীরগতিতে চালিত করে ও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সেহরিতে এসব খাবার খেলে দীর্ঘ সময় আপনার ক্ষুধা লাগবে না।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের জন্য উপকারী। যেমন- বাদাম, তিসি বীজ, চিয়া সিড ইত্যাদি সেহরিতে খেলে ক্ষুধা কমে যায় এবং এটি আপনাকে দীর্ঘক্ষণ সতেজ রাখবে।
ফলমূল
ফল প্রাকৃতিক শর্করা এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময় ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, কলা এবং তরমুজ সেহরির জন্য উপযোগী। কলা পটাশিয়াম এবং ফাইবারে ভরপুর, যা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে এবং তরমুজে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
এছাড়া, আপেল, কমলা, পেঁপে ইত্যাদি ফলও সেহরির জন্য ভালো। এসব ফলেও রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল, যা শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে শক্তি প্রদান করে।
ইসবগুল
ইসবগুল হচ্ছে প্রাকৃতিক ফাইবার যা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। এটি পানি শোষণ করে পেটকে পূর্ণ রাখতে সাহায্য করে।
দুধ ও দই
দুধ ও দই সেহরির জন্য ভালো অপশন। এতে থাকা প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম শরীরের জন্য উপকারী। দই পেটে থাকা খাবার দীর্ঘ সময় ধরে হজম হতে সাহায্য করে, যা ক্ষুধা কমাতে সহায়ক।
পানি
পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে এবং পানির অভাব শরীরে তৃষ্ণা ও ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। তাই সেহরির সময় পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।
সাহ্রিতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
বেশি তৈলাক্ত, মসলাদার ও ঝাল খাবার খাওয়া উচিত নয়। সাহ্রির খাদ্যতালিকা থেকে বিরিয়ানি, পোলাও, তেহারি প্রভৃতি ভারী খাবার বাদ দিন। সাহ্রিতে এসব খাবার খেলে বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া এবং পেটফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে।
লবণযুক্ত খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয় এবং যেহেতু সারা দিন পানি খাওয়া যাবে না, তাই লবণযুক্ত খাবার পরিহার করাই উত্তম।অনেকে সাহ্রিতে কোল্ড ড্রিঙ্কস বা কোমল পানীয় খেতে পছন্দ করেন। এসব পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে, যা প্রস্রাবে পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সাহ্রিতে ক্যাফেইন আছে, এমন পানীয়, যেমন চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ক্যাফেইন ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে।
রমজান মাসে দীর্ঘসময় রোজা রাখার কারণে শরীরের শক্তি ধরে রাখতে এবং সারাদিন ক্ষুধা কম অনুভব করতে সাহ্রিতে সঠিক খাবার নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদদের মতে, সাহ্রিতে কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেলে শরীর দীর্ঘক্ষণ এনার্জি ধরে রাখতে পারে এবং ক্ষুধার অনুভূতি কম হয়। তাহলে জেনে নিন, সাহ্রিতে কী খেলে সারাদিন ক্ষুধা কম লাগবে।