শিরোনাম
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৫৯, ১২ মার্চ ২০২৫
মানবদেহের প্রায় ৬০ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত। এই পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি শোষণ, বর্জ্য নিষ্কাশন ও কোষের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। তবে কিছু খাবার আছে যা তৃষ্ণা বাড়িয়ে শরীরে পানির চাহিদা বাড়ায়। বিশেষ করে রোজার সময় সেহরিতে এগুলো এড়ানো উচিত। নিচে এমন ৫টি খাবার ও তাদের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. লবণ ও চিনিযুক্ত খাবার
অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার যেমন চিপস, প্রক্রিয়াজাত মাংস, প্যাকেটজাত স্ন্যাকস শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায়। সোডিয়াম কোষ থেকে পানি শোষণ করে কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে, ফলে তৃষ্ণা বেড়ে যায়। একইভাবে, উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার যেমন কেক, ক্যান্ডি, সোডা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ায়। গ্লুকোজ মেটাবলিজমের জন্য অতিরিক্ত পানি প্রয়োজন হয়, যা ডিহাইড্রেশন ও তৃষ্ণার কারণ হয়।
২. ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
কফি, চা বা এনার্জি ড্রিংকসের ক্যাফেইন মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এটি কিডনিতে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে সোডিয়াম ও পানি শোষণ কমায়, ফলে ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে পানি বেরিয়ে যায়। এতে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে তৃষ্ণা বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন (প্রায় ৩ কাপ কফি) পান করলে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে।
৩. মসলাদার ও তৈলাক্ত খাবার
ঝাল মরিচের ক্যাপসাইসিন মুখের রিসেপ্টরকে উদ্দীপিত করে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়, যা ঠাণ্ডা রাখতে অতিরিক্ত পানি প্রয়োজন হয়। এছাড়া, তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার (পাকোড়া, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই) হজম করতে পিত্তরসের সাহায্য লাগে, যা লিভার থেকে নিঃসৃত হয়। এই প্রক্রিয়ায় শরীরের পানির চাহিদা বেড়ে যায়। পাশাপাশি, এ ধরনের খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে তৃষ্ণা সৃষ্টি করে।
৪. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার
প্রোটিন বিপাকের সময় ইউরিয়া ও নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য তৈরি হয়, যা কিডনি ফিল্টার করতে বেশি পানি ব্যবহার করে। উচ্চ প্রোটিন খাবার (গরুর মাংস, ডিম) খেলে শরীরে ইউরিয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। গবেষণা অনুসারে, প্রতি ১ গ্রাম প্রোটিন বিপাক করতে ১ মিলিলিটার পানি অতিরিক্ত প্রয়োজন। ফলে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের পর তৃষ্ণা অনুভূত হয়।
৫. শুকনো ফল ও বাদাম
কিসমিস, খেজুর বা বাদামে প্রাকৃতিক চিনি ও ফাইবার বেশি থাকে, কিন্তু পানির পরিমাণ কম। ফাইবার হজম করতে অন্ত্রে পানি শোষিত হয়। এছাড়া, শুকনো ফলের চিনি রক্তে শর্করা বাড়িয়ে কিডনিকে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে বাধ্য করে। ফলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে তৃষ্ণা বেড়ে যায়।