ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

৮ বৈশাখ ১৪৩২, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

শিশুকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখবেন যেভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ১১:৫৯, ২১ এপ্রিল ২০২৫

শিশুকে মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখবেন যেভাবে

বর্তমান সময়ে শিশুদের মধ্যে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। শহুরে এবং গ্রামীণ উভয় পরিবেশেই শিশুরা খুব অল্প বয়স থেকেই স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের মতো ডিভাইসের সাথে পরিচিত হচ্ছে এবং ক্রমশ এর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।

এ আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই চাই আকর্ষণীয় বিনোদনের আয়োজন। বকাবকি করে লাভ তো নেই-ই, উল্টো তাতে মন খারাপ হবে বাড়ির ছোট্ট সদস্যটির। এমন কিছু করার সুযোগ দিতে হবে তাকে, যাতে সে সত্যিই আগ্রহ পায়। তবে সবাই যে একই বিষয়ে আগ্রহী হবে, তা অবশ্য নয়। যার যেমন পছন্দ, তাকে তেমন কাজের সুযোগ করে দিন।

বিকল্প বিনোদন ও খেলার সুযোগ তৈরি করা:

শারীরিক কার্যকলাপ: শিশুকে খেলাধুলা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো বা অন্য কোনো শারীরিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করুন। এতে তাদের মনোযোগ মোবাইল থেকে সরে যাবে এবং শরীর ও মন সুস্থ থাকবে।

সৃজনশীল কাজ: ছবি আঁকা, গান গাওয়া, নাচ, গল্প লেখা বা বলা, কবিতা আবৃত্তি, মডেল তৈরি করা, বাদ্যযন্ত্র বাজানো ইত্যাদি সৃজনশীল কাজে শিশুকে উৎসাহিত করুন।

বোর্ড গেম ও পাজল: লুডো, ক্যারাম, দাবা, সাপ-সিঁড়ি বা বিভিন্ন ধরনের পাজল খেলার সুযোগ দিন। এগুলো তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটাবে এবং সামাজিক সক্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করবে।
প্রকৃতিতে সময় কাটানো: শিশুকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান, বাগান পরিচর্যা করতে উৎসাহিত করুন অথবা প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সাহায্য করুন।

নিয়ম তৈরি করা ও সময় নির্ধারণ:

স্ক্রিন টাইমের সীমা নির্ধারণ: বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন কতক্ষণ মোবাইল ব্যবহার করা যাবে তার একটি স্পষ্ট নিয়ম তৈরি করুন এবং তা কঠোরভাবে মেনে চলুন।

নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ: দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় (যেমন খাবার সময়, ঘুমের আগে, পড়াশোনার সময়) মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করুন।

টাইমার ব্যবহার: মোবাইল ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণের জন্য টাইমার ব্যবহার করতে পারেন। সময় শেষ হলে মোবাইল সরিয়ে নেওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।

আগ্রহ তৈরি করা:

বই পড়া: শিশুকে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক ও মজাদার বই পড়তে উৎসাহিত করুন। নিয়মিত তাদের নতুন নতুন বই কিনে দিন এবং একসাথে বসে গল্প পড়ুন।
বিজ্ঞান ও কৌতূহল উদ্দীপক জিনিস: বিজ্ঞান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ছোটখাটো সরঞ্জাম, টেলিস্কোপ বা মাইক্রোস্কোপের মতো জিনিস তাদের কৌতূহল বাড়াতে সাহায্য করবে।

বিভিন্ন শখের প্রতি আগ্রহ তৈরি: বাগান করা, রান্না করা, ছবি তোলা, ডাকটিকিট সংগ্রহ করা বা অন্য কোনো শখের প্রতি তাদের আগ্রহ তৈরি করতে পারেন।

পারিবারিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি:

একসাথে সময় কাটানো: পরিবারের সকল সদস্য একসাথে খাবার খান, গল্প করুন বা বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন।

পারিবারিক খেলাধুলা: মাঝে মাঝে পরিবারের সকলে মিলে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় অংশ নিন।

শিশুর সাথে কথা বলা: প্রতিদিন কিছু সময় বের করে শিশুর সাথে তার দিন কেমন কাটলো, তার ভাবনা ও অনুভূতির বিষয়ে কথা বলুন।
ইতিবাচক উদাহরণ তৈরি করা:

বড়দের সীমিত ব্যবহার: শিশুরা তাদের বাবা-মাকে দেখে শেখে। তাই আপনি যদি সারাক্ষণ মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন, তবে তাদের দূরে রাখা কঠিন হবে। নিজের মোবাইল ব্যবহারের সময় সীমিত করুন।

মোবাইল-মুক্ত সময়: পরিবারের সকলে মিলে কিছু সময় নির্ধারণ করুন যখন বাড়িতে কারো হাতে মোবাইল থাকবে না।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি

আরও পড়ুন