শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:০৫, ১২ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ২১:৩২, ১২ মার্চ ২০২৫
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সম্মতি ছাড়া রাজধানীতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি না করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএমপি এ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির জন্য ঠিকাদারদের বেশ কয়েকটি নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীতে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় যে, কিছু কিছু সংস্থা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনে বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে, যা মেরামত করতে অনেক সময় ৭/৮ মাস লেগে যায়। প্রায় সকল ক্ষেত্রে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সকল খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জায়গা কর্তন করা হয়। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় ট্র্যাফিক সিগন্যালের জন্য দিকনির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানোর বিধান থাকলেও তা করা হয় না। এক লেনে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি বা আবর্জনা অন্য লেনে ফেলে রাখার ফলে দুই লেনের যান চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে একই সাথে রাস্তার উভয় পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা হয়, ফলে রাস্তা উভয় দিক থেকে সরু হয়ে যায়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলেও কাটা অংশ সঠিকভাবে ভরাট বা লোহার শিট না দেওয়ার ফলে দিনের বেলায় সে রাস্তায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন-ক্যাবল/পাইপ ইত্যাদি) সংগ্রহ করার পূর্বেই রাস্তা খনন করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বা ডাইভারশনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয় না।
এসব কারণে ঢাকা মহানগরীর যানজট বৃদ্ধি পেয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি হয় জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যানবাহন রাস্তায় অলসভাবে বসে থাকার ফলে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বা কাটাকাটির ক্ষেত্রে নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালনের আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মতি ছাড়া রাস্তা কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু না করা। সকাল ৬ টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ না করা। এ ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করে সকালে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
রাস্তা কাটার আগে বেশ কয়েকটি বিষয়ে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তিতে। এর মধ্যে রয়েছে, কাজ শুরু এবং শেষ করার সময় পূর্বেই ঘোষণা করতে হবে এবং ঐ সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, রাস্তা খননের স্থান ও এর আগে বা পরে ২০০ মিটার পর্যন্ত যথাযথ ট্র্যাফিক নির্দেশনা এবং ট্র্যাফিক সিগন্যাল লাইট লাগাতে হবে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে। পথচারী এবং যানবাহন চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে। কাটা রাস্তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য লোহার শিট রাস্তা কাটার পূর্বেই সেখানে আনতে হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাস্তার একটা লেন রাতের বেলা কাটা যেতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই সূর্যোদয়ের পূর্বেই ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই একই রাস্তার উভয় পাশে একসাথে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। ডিএমপি ট্র্যাফিক বিভাগের প্রতিনিধিসহ রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করতে হবে। কোন রাস্তা রাত্রিকালে সর্বোচ্চ ৭ দিন খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে এবং পরবর্তী তিন রাতের মধ্যে মেরামত করে দিতে হবে, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক/টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।
ডিএমপি বলছে, কোন প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি বা খোঁড়াখুঁড়ির এসব শর্ত ভঙ্গ করে ঢাকা মহানগরী এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।