ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

৫ বৈশাখ ১৪৩২, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৬

হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:৪৭, ১০ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১২:৫২, ১০ এপ্রিল ২০২৫

হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

রাজধানীর পূর্বাচল এলাকায় রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।  বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পর ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।  

এর আগে, গত বছরের অক্টোবর মাসে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি আমলে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাইকোর্ট । একই সঙ্গে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে সম্ভাব্য সব অনিয়মের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। 

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনা, তার মেয়ে পুতুলসহ ১৬ জনের নামে মামলা দায়ের করে দুদক। শেখ হাসিনা ও পুতুল ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন ও সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারকে। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় ঢাকা শহরে রাজউকের এখতিয়ারাধীন এলাকায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও সেটি গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও নীতিমালা ও আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করে মা শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকা অবস্থায় তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রকল্পের বরাদ্দ বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনসম্মত পারিশ্রমিক না হওয়া সত্ত্বেও, আইনমতে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩ নং রাস্তার ১৭ নম্বর প্লট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে বরাদ্দ দিয়েছেন। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্লটের বাস্তব দখলসহ রেজিস্ট্রি মূলে প্লট গ্রহণ করেন। প্রতারণামূলক অবৈধ পারিতোষিক দেওয়া ও নেওয়া এবং অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও বেআইনি অনুগ্রহ প্রদর্শনের মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে দণ্ডযোগ্য অপরাধ করেছেন। 

রাজউকের সাবেক ও বর্তমান ১০ কর্মকর্তাকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, উপ-পরিচালক হাবিবুর রহমান, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, সদস্য মো. নুরুল ইসলাম।

পূর্বাচলের একই প্রকল্পে অনিয়মের আরও দুটি মামলায়ও শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম রয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি মামলা দুটো দায়ের করে দুদক। প্রথম মামলায় শেখ হাসিনাসহ আটজন এবং দ্বিতীয় মামলায় জয়সহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন