শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:২৬, ৩ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪৩, ৩ মার্চ ২০২৫
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার আদালতকে বলেছেন, তিনি আর রাজনীতি করবেন না। তিনি আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছেন। আজ সোমবার (৩মার্চ) সকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের কাছে এ কথাগুলো বলেন কামাল মজুমদার।
রাজধানীর কাফরুল থানায় দায়ের করা আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় কামাল মজুমদারসহ ছয়জনকে আজ সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়।
অন্যরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও এ কে এম শহিদুল হক। এই মামলায় তাঁদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে পুলিশ আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন আদালত।
সকাল ১০ টা। বিচারক তখনো এজলাসে এস পৌছাননি। তখন রাগান্বিত স্বরে কামাল মজুমদার তাঁর আইনজীবীকে বলেন, কেন তাঁর জামিন জজকোর্ট ও হাইকোর্টে চাওয়া হচ্ছে না? এ বিষয়ে আইনজীবী কিছু বলার চেষ্টা করলেও কামাল মজুমদার রাগান্বিত স্বরে কথা বলে চলছিলেন। এর মধ্যে বিচারক এজলাসে আসেন।
তখন কামাল মজুমদার কাঠগড়ার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উত্তর প্রান্তের দিকে চলে যান। এসময় তিনি বিচারকের দিকে চেয়েছিলেন।
এর মধ্যে পুলিশের একজন কর্মকর্তা আনিসুল হক, সালমান এফ রহমানের নাম ডাকেন। আনিসুল ও সালমান দুজনই বিচারকের দিকে চেয়েছিলেন। এ সময় কামাল মজুমদার তাঁর হাত উঁচু করে কিছু কথা বলতে চাচ্ছিলেন। তখন কামাল মজুমদার, কামরুল ইসলাম, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও এ কে এম শহিদুল হকের নাম ডাকেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।
কিছুক্ষণ পর বিচারক আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, কামাল মজুমদারদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের কাফরুল থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ মামলার এজাহারের আপনাদের নাম রয়েছে।’
কথা শেষ না হতেই কামাল মজুমদার বিচারকের উদ্দেশে বলতে শুরু করেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার বয়স এখন ৭৬ বছর। আমি ডায়াবেটিসের রোগী। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডায়াবেটিক মাপার মেশিনও নিতে দিচ্ছে না।’ কামাল মজুমদার এ কথা বলার পর কাঁদতে থাকেন। পরে আবেগ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘এই আদালতে আসার পরও আমরা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।’
কামাল মজুমদার আবার কাঁদতে থাকেন। তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমি আর রাজনীতি করব না। আমি আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। নির্যাতন করা হচ্ছে। এই বয়সে আমাদের নাতি-নাতনির সঙ্গে খেলা করার কথা।’
এ সময় কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘মাননীয় আদালত, কারাগারে ডায়াবেটিক মাপার মেশিন দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। ডিজিটাল কোরআন শরিফ সরবরাহ করার অনুমতি দেওয়া হোক।’