শিরোনাম
বিচিত্র ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:৫১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১৬:৫৩, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
শিল্পকর্ম একটি জাতির রুচি ও মতাদর্শের পরিচয় বহন করে। কিন্তু শিল্পকর্ম যদি হয় অদ্ভূত এবং মজার সেটি তো শোরগোল ফেলবেই। সাম্প্রতিক সময়ে দেয়ালে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো কলাশিল্প নিয়ে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমে চলছে ব্যাপক হাস্যরস।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত নিলামে ‘কমেডিয়ান’শিরোনামে কলার শিল্পকর্মটি প্রদর্শিত হয়। ইতালির শিল্পী মরিজিও ক্যাটালান প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ফলটিকে শিল্পকর্মে রূপ দিয়েছিলেন। তাতেই সাধারণ কলাটির দাম ওঠে ৬২ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৪ কোটি টাকা। নিলাম সঞ্চালক অলিভার বার্কার মজা করে বলেছিলেন, ‘কোনোভাবেই যেন ছুটে না যায়! এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।’আরও বলেন, ‘এও বলতে হবে, এমনটি কখনও ভাবিনি আমি। একটি কলার জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার!’
বুধবার (২০ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সদেবিজে নিলাম শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে ছয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে সেটি কিনে নেন চীনা বংশোদ্ভূত ক্রিপ্টো উদ্যোক্তা জাস্টিন সান। এদিন ৮ লাখ ডলার থেকে নিলাম শুরু হয়। এক মিনিটের মধ্যেই এটি ২ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
প্রথমবার শিল্পটি কিনে জাস্টিন সান প্রতিজ্ঞা করেছিলেন কলা খেয়ে ফেলবেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে হংকংয়ের একটি নামী হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডজনখানেক সাংবাদিক ও ইনফ্লুয়েন্সারদের সামনে তিনি কলাটি খান। কলায় কামড় দিয়ে সান বলেন, ‘এটি অন্যান্য কলার চেয়ে অনেক সুস্বাদু।’অতিথিদেরকে একটি করে কলা ও স্কচটেপ রোল স্মারক হিসেবে দেওয়া হয়।
নিজের অনভূতি জানাতে গিয়ে সান বলেন, ‘এটি আসলে এমন একটি সাংস্কৃতিক ঘটনাকে উপস্থাপন করে যা শিল্প, মিম ও ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে।’
কলাটি যে বেশিদিন টিকবে না, সে কথাও স্বীকার করে হাসিমুখে তিনি বলেন, ‘অনন্য এক শৈল্পিক অভিজ্ঞতার অংশ হিসেবে কলাটি আমি খেয়ে ফেলব। এর মাধ্যমে শিল্পের ইতিহাস ও জনপ্রিয় সংস্কৃতি উভয় ক্ষেত্রেই আমি এটিকে সম্মানের আসনে বসাব।’
শিল্পকর্মটির বিশেষত্ব হচ্ছে, এতে ব্যবহৃত কলাটি প্রতিবার প্রদর্শনীর পূর্বে নির্দেশিকা অনুযায়ী বদলাতে হয়। জাস্টিন সান শিল্পকর্মটি কেনার সময় সেই নির্দেশিকাও কিনে নেন। কেউ যদি মরিজিও ক্যাটালানের ওই শিল্পকর্ম কেনেন, তবে তিনি কলাটির সঙ্গে একটি সার্টিফিকেট পাবেন। সেই সার্টিফিকেট যার কাছে থাকবে শুধু তিনিই যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে নতুন আরেকটি কলা দিয়ে শিল্পটি তৈরি করার সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে, তিনি ওই কলা বর্তমানে কেনা দামের চেয়েও বেশি দামেই বিক্রি করবেন।
তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও এই শিল্পকর্মে ব্যবহৃত কলা দুবার খাওয়া হয়েছে। প্রথমবার ২০১৯ সালে মিয়ামি বিচের আর্ট বাসেল মেলায়, সেবারই প্রথমবারের মতো এই শিল্পের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। প্রথমবারই পারফরম্যান্স শিল্পী ডেভিড দাতুনা কলাটি দেয়াল থেকে হাতে নিয়ে খেয়ে ফেলেন। বিষয়টি নিয়ে পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে দাতুন জানান, এটিও ছিল তাঁর একটি পারফরম্যান্স আর্ট। কলাটি ২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ান এক শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার খাওয়ার সুযোগ পায়। তবে দুজনের কেউই কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি।